Posts

Showing posts from 2016

শেষ বিকালে ।। বিশ্বাস

ভেবে ছিলাম কাছে ডেকে বলি তোমার হাতটি ধরে চলি সন্ধ্যার অবসরে তোমাতে চক্ষু মেলি ট্যাক্সি ক্যাবে চড়ে দুরে কোথাও চলে যায় শহরের কোলাহল ছেড়ে ঘন্টা কয়েক। ভেবে ছিলাম কাছে গিয়ে বলি তোমার হাতটি ধরে চলি দুপুরের তপ্ত রোদে খাতার ছায়া ফেলি রিক্সার হুড লাগাতে গিয়ে মাথায় মাথায় ধাক্কা খেয়ে রাগে কেটে যাবে কয়েক ঘন্টা চুপচাপ। ভেবে ছিলাম দুরে থেকে ইসারায় বলি তোমার হাতটি ধরে চলি শেষ বিকালের মেঘে উন্মুক্ত পায়ের বৃষ্টি হোলি বেলা ফুরালে তোমার যাবার পথে দূর থেকে চেয়ে থাকি কতোক্ষন। ভেবে ছিলাম কিছু না বলি আমি বরং একা একাই চলি ভিজে কুঁকড়িয়ে যাক না পাওয়া বাসনা গুলি কতোক্ষন বসে থেকে হঠাৎ হারিয়ে যাই তোমার বিচরন ভুমি হতে গন্তব্যের রথে।

আত্নভোলা ।। বিশ্বাস

ইঁট পাথরের ব্যস্ত নগরীর কোলাহল ছাড়িয়ে সে এক আত্নভোলা পথের ধারে দাঁড়িয়ে দুবাহু বাড়িয়ে আকাশপানে চেয়ে আছে অবিরাম । চোখে তার একগাদা স্বপ্নের আনাগোনা ব্যস্ত ভীষন উদাসী মন - মানুষের তরে ভাবনা বলবে কথা ভুলে দুঃখ-ব্যাথা শ্লোক তব মানবতার মুক্তি গাঁথা সৃজন হবে এমন মানব সমাজ- তাই নিয়ে সকল প্রকার আরাধনা।

একজন প্রেমিকের শ্লোক ।। বিশ্বাস

কত শত বার প্রেমে পড়েও আমি প্রেমিক হতে পারিনি আমার যদি কোন কিছু থেকে থাকে তবে তা অপ্রেমে যার অন্তরে ক্ষরন নাই- অতৃপ্তিরা কাঁদে না তাকে আমি বরং মানুষরুপী শরীর বলব মানুষ নয় অজস্র প্রেমিকার ভিড়ে যাপন করি অনাড়ম্বর জীবন। আমার প্রেমিকারা সব যুদ্ধবন্দিনী দাসী হিসেবে যাদের ভোগ করে চলে শস্যক্ষেত্রে ফসল ফলাতে চাষাবাদ চলে বাধাহীন ইচ্ছা -অনিচ্ছা মুল্যহীন যাদের জমির মালিক সকল কৃষ্টির পুরুষতন্ত্র চাই এমন একটা মন্ত্র - যাতে স্লোগানে স্লোগানে মুখর হবে প্রতিটি হৃদয় পুরুষতন্ত্র নিপাত যাক, প্রেমিকারা সব মুক্তি পাক।

ওকাম্পো বলেছিল ।। বিশ্বাস

বিরামহীন তীর্থযাত্রা - কারাগারবাস - পারিনি - হবেনা জীবন যুদ্ধে আমি এক পরাজিত সৈনিক ওকাম্পো বলেছিল - তুমি বরং ভালবাসতে ভুলে যাও ওরিয়ানার মত দাপিয়ে বেড়াও। বনমালী বিশ্বাস - একজন কবির নাম পান্ডুলিপি ছাড়া আর কি থাকে কবিদের প্রশ্ন করেছিলাম বাকিটুকু নিলাম - জীবন হারিয়ে গেল পড়ে রইল কিছু টুকরো কাগজে কলমের আঁচড় শোনা হয়নি কবি হয়ে ওঠার গল্প। জীবন ঢের দিয়েছে - যা কিছু চাওয়া - অল্প বলেছিল -সত্যের ভাবাবেগ একমাত্র সম্বল আমি তখন - তখন থেকে আজ অবধি মেলায় যায়নি - পুজিনি -পেছন ফিরে চাইনি মিথ্যা শোরগোল ভাল লাগেনা আমার বরং মাতাল হই - প্রশ্ন গিলি একান্তে। ওকাম্পো বলেছিল - তার চেয়ে তুমি বরং নীলগিরি যাও অগভীর জলে সাঁতরাও।

আসতে চেয়েছ তাই অপেক্ষায় আছি ।। কবি বিশ্বাস (বাবা )

তুমি আসতে চেয়েছ তাই অপেক্ষায় আছি বসন্ত থেকে গৃষ্ম পর্যন্ত অপেক্ষায় আছি পাখির বাচ্চারা যেমন খাবারের জন্য বাসায় শুয়ে শুয়ে তার মায়ের আগমন অপেক্ষায় থাকে। চাঁদ যেমন একটু একটু করে বেড়ে পূর্ণিমা পায় আমি ওভাবেই অপেক্ষায় আছি। তুমি আসতে চেয়েছ, তাই অপেক্ষায় আছি। বাতাসে ফুলের গন্ধ বয়ে আনে কল্পনা যেমন একটি সুন্দর কিছু গড়ে একটি প্রেম অথবা একটি সংসার অনুভবে স্পর্শ করি তোমায় বুদ্ধের মত অশোক গাছের নিচে নয় প্রকৃতির প্রেমে বুধ্ব হয়ে প্রকৃতিরূপী ঈশ্বরকে পাবার আশায় নয় আমি আমার খড়ের ঘরে তোমাকে পাবার আশায় ভ্রুন যেমন মাতৃগর্ভে দিনে দিনে বড় হয় আমিও ঠিক ওভাবেই অপেক্ষায় আছি তুমি আসতে চেয়েছ তাই অপেক্ষায় আছি বেকারেরা যেমন চাকরির আশায় অফিসে অফিসে ধর্না দেয় বিপ্লবীরা যেমন বছরের পর বছর ধরে সংগঠনকে গড়ে তুলে আর্টিষ্ট যেমন তুলির আঁচড় টেনে টেনে ছবি বানায় প্যলেসটাইনেরা যেমন মুক্তির জন্য সংগ্রামে রত ল্যাতিন আমেরিকান যেমন বর্নবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার আমিও ঠিক ওভাবেই তোমার অপেক্ষায় আছি বৃদ্ধ অথবা বৃদ্ধারা যেমন মৃত্যুর জন্য দিন গুনে দুঃখীর মা তার মেয়েকে কোলে নিয়ে সন্ধ্যা উঠানে বসে, তার স্বামীর দেহ শ্...

ইস্যু ।। বিশ্বাস

আজকে রাস্তার পাশে পড়ে আছে আমার বোনের ধর্ষিত লাশ আজকে রাজনীতিকের চোখে মুখে লেগে আছে আজন্ম -স্বলজ্জ সুবিধাবাদের পাপ । আজকে ক্রিকেট বিশেষজ্ঞময় আজকে তোমার জন্য নয় আমার সময় আজকে ধর্ম যার যার উৎসব সবার  তবে ধর্মহীনে আপত্তি তোমার । আজকে গুড়িয়ে ফেলা হল আরও একটি পুরাকির্তী আজকে শরতের অভিজান আজকে পানশালায় নিরিবিলি মজমাস্তি প্রতিটি আজকে দিন গড়ালেই কালকে হয়ে যায়।

সান বাঁধানো ঘাট ।। বিশ্বাস

বিষ বেদনার ঢল-অভ্যস্থ নদীর গতিপথ - চলতে চলতে হাওয়ায় দিক ভ্রম গাছ থেকে একটা হলুদ পাতা খসে পরল জলে ঢেউয়ের ঝাপটা - পরিবেশ গম্ভীর-শান্ত-শঙ্কিত- হঠাৎ নিশ্চুপ হয়ে গেল চতুর্দিক হৃদয়-মননে রক্তধারা বয়ে গেল এক চপট। পাড়ে বসে আছে দুজনাতে- একান্তে ঘন্টা বাজছে ঢং ঢং - ছুটির ঘন্টা ছায়া সুনিবিড় বাতাস পাল্টে দিতে চাওয়া রং মিটি মিটি আলো জ্বলছে অদূরপানে ছুটির ঘন্টা বেজে গেছে কখন - হারাতে চাইছে মন -দুরগগনে । যন্ত্রনার প্রতিচ্ছবি দেখতে - পাশের ভাঙ্গা দেয়াল থেকে খসে পড়া একটা ইঁট মাঝপথে বাধা প্রাপ্ত - নুনে লাগা আর একটা ইঁট না না করছিল ক্ষয়ে ক্ষয়ে পাড়টা ট্যারা-ব্যাকা প্রায় - সান বাঁধানো ঘাটটা আজ আর তেমন নেই ।

ঠাঁই দাঁড়িয়ে ।। বিশ্বাস

কবে থেকে ঠাঁই দাড়িয়ে আছি - এক পলক দেখবো তোমার লাজে রাঙা মুখ ইদানিং ঘরটা ভীষন ফাঁকা ফাঁকা লাগে ক্লান্তদেহ পড়ে থাকে এলোমেলো গড়াগড়ি খাই - প্রহর গুনি রাত গভীর থেকে গভীরতর হয় । লন্ঠন কেবল স্মৃতি এখন চাঁদ দেখে রাত কাটেনা আর কতোকাল পুবের আকাশে সোনালী আলো দেখিনা " হ্যালো তুমি কি এখনো ঘুমোচ্ছো? দ্যাখো আজকের সকালটা ভীষন মিষ্টি ওই শুনছো! " কেউ বলেনা আর । ভোর হলে - ৩টা বেজে গ্যাছে বিকেলটা যাই প্রতীক্ষায় আমি ঠাঁই দাড়িয়ে আছি - স্থির এক পলক দেখবো তোমার লাজে রাঙা মুখ ঠিক এখানেই ছিলাম গতরাতেও দরজায় ঠক ঠক শব্দ করছি অনবরত ভেতর থেকে কোন সাড়াশব্দ নেই আমি দাড়িয়ে আছি অনন্তকাল।

চরম উদাস ।। বিশ্বাস

ঠিক কবে থেকে মনে নেই উদাসীনতা গ্রাস করেছে বহুকাল আগে যবে থেকে সত্যকে চিনতে বলেছ যেদিন পথটা দেখিয়ে দিয়েছ ভাবতে শিখিয়েছ চারিদিকে যা কিছু দেখি উল্টো রথ ভুলে গেছে অনেকে অনেকে ভুলতে বসেছে পথ বড্ড বেশি দুঃখ হয় তখন তখন আমি নাকি বিভ্রান্ত কবে সত্য সঠিক ছিল কবে পথ মুক্ত ছিল একধাপ এগিয়ে ছিল বটে আজ এ শুধু ধাঁধা ধর্মের গন্ডিতে পড়েছে বাঁধা মোল্লা -পুজারীর হাতে ঝান্ডা চারিদিকে জরাগ্রস্থ - ধমনীতে দুর্নীতি শিরায় শিরায় বাহুনীতি। পেট পুজারীরা এখানে ঠিকাদার যে যেভাবে পিষে চলেছে শ্রেনীভেদে বুভুক্ষের খাবার ছিনিয়ে খাচ্ছে কেউ কেউ ঘুমিয়ে কাটাচ্ছে জীবনভর আমাকে প্রশ্ন করা হলে আমি বার বার বলি তুমি মিথ্যা ভুল পথের যাত্রা তোমার। এই সমাজের অরাজকতা দেখতে দেখতে আমি ভীষন রকম ক্লান্ত।

কলঙ্ক ।। বিশ্বাস

জীবন খাতার পাতাগুলো সাদাই রয়ে গেছে আমি চাই কেউ এসে উল্টে-পাল্টে দেখুক কলঙ্কের কালি লেপ্টে দিক সর্বাঙ্গে সামান্য দাগ কেটে দিক পৃষ্ঠায় পৃষ্ঠায় বাহারী রং আমি চাই না - বলপেনই যথেষ্ট কাল কালির আঁচড়েই তৃৃপ্ত হতে চাই- হৃদয় গগন। পেন্সিল হলেও চলবে - চাইলেই মুছে দেবে।

বৃষ্টির গান ।। বিশ্বাস

অঝর ধারায় আজি ঝরিছে বরষা তোমার ছোয়ায় মনে আনে উষ্ণতা টুপ টুপ শব্দে অঝর বৃষ্টি ধারা জলের ফোটায় আজকে পাগল পারা। চলো মাতাল হই ভিজি দুজনে প্রসারিত হাতে চাহিয়া আকাশ পানে ধুয়ে যাক শরীর-মনের যত পাপ জাগে মোর প্রানে এ কোন উত্তাপ। চোখে মুখে লাগুক বৃষ্টির ছাপ উড়ে যাক সকল দুঃখ ব্যাথার তাপ চলো ভালবাসি মোরা প্রকৃতির বানে অনিন্দ সুন্দর বৃষ্টি ধারার গানে গানে।

শব ।। বিশ্বাস

রাস্তার পাশে পড়ে আছে বন্ধুর শবদেহ শকুনেরা ছিড়ে ছিড়ে খাচ্ছে হাড় হতে মাংশ পচে-গলে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে সেই গন্ধে তোমার নাক সিঁটকোয়।  পুঁতে দেয়ার মানুষের বড্ড অভাব বন্ধুকে তুমি চিনো না -চিনতে চাও না তোমার চোখ যাই না সেখানে - নিজেকে নিয়েই ব্যাস্ত তুমি গড়তে প্রাচুর্য পাহাড়সম তোমার সময় হয় না পাশের বাসার মানুষটার জন্য নিজেকে নিয়েই তুমি ধন্য তোমার সময় নেই বন্ধুর জন্য লাশের জন্য একদিন ঠিক এভাবেই তোমার দেহ খুটে খুটে খাবে শকুনের দল তোমারও ঠিক একই দশা হবে সেদিন সেদিন হয়ত কাক-পক্ষীও ঠোকর পাড়বে পচে-গলে খসে খসে পড়বে হাড়-মাংশ।

বাজি ।। বিশ্বাস

নত মস্তকে করোজোড় করতে বলা হলে গম্ভীর ভাবে লেলিয়ে দেয় নিজের ব্যক্তিসত্তাকে চেতনারা কুঁকড়িয়ে কাঁদে নিজের মৃত্যুতে নিজেকে বিকিয়ে চলতে চলতে পরিনত হৃদয়হীন মস্তক। চিন্তারা বাজি ধরেছে- এপথে সে হাঁটবেই এখানেই তার অন্তিম চাওয়া এভাবে লেলিয়ে দিতে দিতে পেরোবে বিদ্ধস্থ পথ ছিনিয়ে আনবে বিজয় মুকুট মালা পরে ভ্রমন করবে লোকালয় তুমি যদি হেয় করো - ছুড়ে ফেলে দিতে চাও পদ্মপুকুরে কোন কিছুই প্রতিপন্ন নয় ভাঙতে শিখে গেছে অনেক আগেই গড়তে চাই নতুন ভুবন ডানা মেলে উড়তে চাই গগনপারে ভাবতে দিতে চাওনা -বলতে দিতে চাওনা আর কতকাল বিস্মিত করবে বলিদানে চিন্তার বলিদান -চেতনার বলিদান মাড়িয়ে ফেলতে চাই কন্টক আধমরা শরীরে ফিরিয়ে আনবে প্রাণ বাজি ধরেছে।

বনাম গুনঞ্জন ।। বিশ্বাস

মাঝে মধ্যেই দুর্ভাবনারা মোহগ্রস্থ রোদ্রজ্জল দিনের ভান্ডার ফুরিরে আসছে বাতাসে ভাসছে গুনঞ্জন ধ্বনি কি করো হে তুমি? এভাবে তো রাজার ভান্ডারও ফুরায় অকর্মার দল বলে তেড়ে আসছে একদল নিয়ন আলো এখানে জ্বলে না এখানে নেসার ঘোরে কেউ টলে না রুটি রোজগারে গড়িয়ে যাই বেলা মস্তিষ্কে একটা মাত্র শব্দের খেলা-                                   সারাবেলা । আর কোন শব্দ কান শোনে না তেমন একটা মাত্র একটা শব্দ কান বিষিয়ে তুলেছে মাত্র একটা শব্দ সব কিছু ভুলিয়েছে জীবন-সংসার নিয়ে মাতো - তোমার কি সময় হয় নি? একটা শব্দের গুনঞ্জন বার বার কথাগুলো বলে চলেছে কান বিষিয়ে তুলেছে। আমাকে ফিরিয়ে দাও সোনালী সকাল আমাকে আলো ঝলমলে দিন দাও আমি ঠিক মাদুর পাতা উঠানে গড়িয়ে পড়বো আমি ঠিক তাপমাত্রা বাড়াবো গগনে বরষা নামাবো শ্রাবনে -পার্বনে। তোমার মত জীবনধারা আমি চাইনি বলে চলো তোমার যা খুশি আমি বরং আত্ব পুজি -মানুষ ভোজি।

মাতাল বিভ্রম ।। বিশ্বাস

একটি পূর্ণিমা রাত আমাকে অন্ধ করেছিল- পুকুর পাড়ে তোমার নগ্ন শরীর -আলো ঝলমলে স্তন বৃন্ত -গ্রীবা-ওষ্ঠদেশ -সুডোল নিতম্ব-গোড়ালি-খাঁজ- নেহাত নিখুঁত হাতের গড়া এত মনোরম -মনোহর - এত পরিপুর্নতায় ভরা। এত আলো আমি আগে কখনো দেখিনি আমার চোখ ঝাপসা করে দিয়েছিল- আমাকে অন্ধ করেছিল রাত কটা বেমালুম ভুলে গেছি - পাশের বাড়ির ঘড়ির কাঁটার টিক টিক শব্দে  ঘোর কাটে আমার -সম্ভিত ফেরে। ঝাপসা দেখে দেখে পথ চলি একা - ঘর বরাবরই ভাল লাগেনা - তবু ফিরতে হয় আমোঘ ঘোর কাটে কৃত্রিম আলোয় আমি অন্ধ ছিলাম কতোক্ষন - আমাকে অন্ধ করেছিল কিশোরীর অববয়। তবে কি ছিল? মানবী নাকি স্বর্গ থেকে নেমে আসা হুরী। তবে কি আমি স্বপ্ন ঘোরে নিমজ্জিত - কল্পনায় চিত্ত মোর সজ্জিত! একটি পূর্ণিমা রাত অন্ধ করেছিল- মাতাল প্রেমে।

উল্টো রথ ।। বিশ্বাস

হর রোজ ভোরবেলাতে - মিষ্টি রোদে সূর্য হাসে - ভীষন গোপন অভিলাষে - দিন ফুরালেই অন্ধকার নেমে আসে আলোর মেলায় কালোর ভেলা - ভাসছে সারাবেলা 'আমি সঠিক আমি সঠিক' চলছে একি লীলা। নন্দিত নরকে বিকৃত শোভন শেখে কারাগার বাস -বিকৃত অভ্যাসে। তবু পেছনের পথে মত্ত রথযাত্রা - কি আশ্চর্য! -ছাড়িয়ে চলেছে মাত্রা ঘোড়া ভেবে গাধার পিঠে চাবুক চাপড়ায়। চারপাশে এ কি দেখি - কেন পরিবেশ এত গম্ভীর কাদা ছোঁড়াছুড়ির সংস্কৃতি -দাবানলে দাম্ভীক। সাড়া জাগাও প্রানে - অন্ধকার ঘুচে যাক ভালবাসার গানে মুক্ত করো ভয় -খুলে দাও প্রনয়ের দ্বার গন্ডিতে পরাজয় -নেবে কে এই ভার।

তুমিহীনা ।। বিশ্বাস

সে আমার কাছে এসেছিল আমি না হয় পারিনি বলতে হেরে যাওয়ার ভয় ছিল সাহসের অভাব ছিল লজ্বাবোধ জাগ্রত ছিল বলেই তুমিও তো পারতে- তুমিও তো কিছু বলতে পারতে বলতে চেয়েছিলে কি? হয়ত চেয়েছিলে হয়তোবা না বার বার ফিরে ফিরে চেয়ে থেকেছি বলতে চেয়েছি -পারিনি। তুমি এক বার বলে দেখো তোমার জন্যে প্রতিদিন সুখের কবিতার সমুদ্রে ঢেউ বইয়ে দিব ভালবাসার কথা কি করে বলতে হয় ভুলে গেছি ভুলতে চেয়েছি -পারিনি। তোমার কি মনেটনে নেই তুমিও কি পারতে না কিসের ভয় তোমার - তোমাকেই তো বেশি সাহসী মানায়। আমি না বড্ড বেশি তুমিহীনা।

ভুলিনি প্রিয় চিঠি ।। বিশ্বাস

বহুদিন পরে তোমার একটা চিঠি চিঠিতে বলেছিলে পুকুর পাড়ে অপেক্ষা করবে দুপুর গড়িয়ে সারাটা বিকেল কেটে গেছে প্রতীক্ষায় যখন এলে আকাশে গোধুলীর রং সুর্যটা লাল টকটকে -ধীরে ধীরে রং বদলাতে চাচ্ছে আলোটা মুখে পড়তেই কি যে মিষ্টি লাগছিল তোমাকে পানিতে তোমার প্রতিচ্ছবি - মনে হয় কোন জল কন্যাকে দেখছি আমি এত গভীর ভাবে আগে কখনও দেখিনি এত গভীর ভাবে আগে পড়িনি তোমার প্রেমে হাতে হাত রেখে জানতে চেয়েছি 'ক্যামন আছো? প্রতি উত্তরে ভাল বলেছিলে বলতে গিয়ে চোখদুটো ছলছল করছিল এসেই চলে গিয়েছিলে বলেছিলে যেন ভুলে যাই সেই যে গেলে -আর এলে না পুকুর পাড়ে আর কোন চিঠি আসেনি কখনও আমি ভুলতে পারিনি প্রিয়, চাইলেই কি সব ভোলা যায়।

আমি বাংলাদেশ বলছি ।। বিশ্বাস

নিরন্তর অন্তর দহনে জ্বলছি- কষ্টে নয়- পাষান বেধে বুকে দিন আমার যাই এ কোন অসুখে।  জীবন জুয়ায় মত্ত আমি সারা বেলা- ঘরে আমার কাল কেউটের বসবাস ফনা তুলে ছো মেরেই হাসফাস। রন্ধ্রে রন্ধ্রে বিষ ছড়িরে পড়েছে- জাগ্রত চেতনার অকেজো দশা ক্ষমতার লড়াই - বিবর্ন বিদীশা। গিলে ফেলতে পারলেই স্বস্তি- ক্ষুধা মেটাতে তাজা রক্ত লাগে তৃপ্ত হয় পরের দানে আপন ভাগে। মিথ্যাটাকেই আজীবন সত্য বলে - ফিরতে চাই ফের পুরোনো পথে আজকে হেথা সবে ওদের সাথে। বিবেক বোধের ভাটা পড়েছে- আমি এদের গন্ড-মুর্খ বলি বাধ্য হয়ে ওদের সাথেই চলি।

হেমলক বিষ ।। বিশ্বাস

একমুঠো হেমলক বিষ পান করব  তোমার পেয়ালা হতে                               - গভীর রাতে চুমুক দিয়েই মসগুল কান্তির বেদনাতে আমাকে ফিরিয়ে দিওনা -ওপাস ফিরে ঘামার্ত হতে চাই -মিশে যাই তোমার প্রকান্ড হতাশার নগ্ন বাহুতলে বন্দী হই -সঙ্গী হই -নন্দী হই - ভষ্ম হই নিত্য মায়াজালে একে কি প্রেম বলেনা! - কি বলে তবে অজস্রবার ডুব দিতে দিতে ছুঁব আমি- হৃদয় স্পন্দন। তখনও কি ফিরিয়ে দিবে আমায় - পারবে ফিরিয়ে দিতে -পারবে বন্দী করতে শেকল বাঁধা কুঠিরে- এক মুঠো সুধা পান করব তোমার পেয়ালা হতে রহস্যভেদী দুর্গম গিরিখাতে -আলো হাতে দল বেঁধে জোনাকির বিচরন -আমরন আকুল আবেদন -ফিরিয়ে দিওনা ওপাস ঘুরে একে কি প্রেম বলেনা! - কি বলে তবে সমুদ্র-স্নানে যাব আমি মাতাল হব বলে                          ...

সংস্করন ।। বিশ্বাস

ওহে ভাবনা-চিন্তাহীন পাখি মেলো দুটি আঁখি ঝাঁকে ঝাঁকে তারারা এসে ভীড় জমায়েছে আকাশের বুকে তুমি কি অন্ধ হয়ে গ্যাছো নাকি! তাকাতে ভয় পাও কেন? কিছু বলছ না কেন - নাকি জানোনা! কথার মাঝে ভুলগুলো সব - দূরীভুত হোক আজকে হেথা ব্যাস্ত ওরা - গাইতে বৈরি শ্লোক ধাবিত হও নতুনের পথে - চলমান পুরোনোর বিপরীতে এখানে বিপথগামী বলতে কিছু নেই এ পথে কল্পলোকের আত্নারা ঘোরেনা।

অনাড়ম্বর আকাঙ্খা ।। বিশ্বাস

সময় বড়ই কম - দম নেই কোথা ধীরে ধীরে জীবনী শক্তি হারাচ্ছে কোষগুলো টিকে থাকার লড়াই - জীবনধারনে অভ্যস্থ হায়!  - কি কান্ড কি কান্ড এখানে কল্পলোকের গীত গাইতে সবে ব্যাস্ত বেঁচে থাকাটাই আসল - অনন্তকালে আমার লোভ নেই তবু বাঁচতে চাই দীর্ঘকাল - চিন্তায় চেতনায় আমার আজন্ম স্বাদ কেউ আমার নাম ধরে ডাকুক একটু ভালোবাসুক -আপন মনে ভাবুক। চারিপাশ বিপত্তির পথে- সকল বাধা ছিন্ন করে পাড়ি দিতে হবে দুর্গম পথ স্বপ্নগুলো পিছু ছাড়েনা - হারাতেও চায়না সময়ের অতল গহ্বরে লড়াই চলছে  টিকে থাকার -মনে রাখার ইতিহাস সবকিছু মনে রাখে না- ওর কোন ভাবনা নেই- হারাতে পারলে - স্মৃতি থেকে মুছে দিতে পারলেই খুশি যুদ্ধ চলছে বেঁচে থাকার - টিকে থাকার অনাড়ম্বর পৃথিবীর পাতায় পাতায় - চলমান জীবনের খাতায়।

এ কোন পথে স্বদেশ ।। বিশ্বাস

ক্লান্ত দেহ ক্লান্ত মন উদ্ভ্রান্ত কতোক্ষন কপালরন্ধ্র জুড়ে ঘাম ঝরছে - শীতল হতে চাই - কৃত্রিম হাওয়ার খরা পড়েছে - তপ্ত হতে হতে বিষন্ন- ক্ষুন্ন হৃদয় গগন কে যেন বলেছিল এখন আর খরা পড়েনা পাখার ঘুর্নন বন্ধ হয়না এখানে - জোয়ারে ভাসছে স্বদেশ। চোখ মেলে দ্যাখো -   ধ্বংশ-উন্নয়ন পাশাপাশি হাঁটছে আগে পিছে ধীরে ধীরে কর্মক্ষমতা হারাতে বসেছে ফুসফুস সুন্দর মৃত্যু নয় - খুন নিত্য নৈমিত্তিক নিকোটিনের বিষ রন্ধ্রে রন্ধ্রে -খাঁচায় বন্দী।

বিবেক বলছি ।। বিশ্বাস

হে  ঈশ্বর  ------------- সময়ের দোষে অসময়ের পথে নিত্য তোমার বিচরন আমি কেবল দুষ্ট হলাম তোমার গন্তব্যে আমার  মরন। আমি পারি না তোমার কাছে যেতে কেন পারিনা বলতে পার? পারবেনা। ও তুমিতো আবার সব পারো না শুধু পারো ভয় দ্যাখাতে অকল্পনীয় লোভী বানাতে                                   ভোগবাদী বানাতে। আমি ভয় পেতে চাই না চাই না লোভী হতে আমি চাই সুন্দর সুশৃঙ্খল বিভেদহীন মানুষে মনুষত্ব্য। আমি পারিনা তোমার কাছে যেতে কেন পারিনা নিশ্চয় বুঝোনি তুমি বুঝবে না! কেননা তুমি আমাকে বুঝতে চাওনা। ও তুমি তো আবার সব পারো না। পারলে হয়তো যাওয়া হত।

পল্লীবালা ।। বিশ্বাস

মনে পড়ে সহস্র বার- অঝর ধারায় ঝরছো তুমি গড়ছো আপন রুপে বদলে গেছো আপন মণি ছিন্ন হতে হতে। ফিরে হয়ত যাওয়া হবে না পাওয়াও হবে না হয়ত আমি আর নেই মনে তবু রবে অনন্ত যৌবন পিয়াসী মুগ্ধতার বানে গোধুলীর টানে রবে মম গানে গানে। মহানন্দার বাঁকে বাঁকে আলো ছায়ার মেলা জমে আজও শুধু হারিয়েছে অভিমানের পাতাগুলো সোনালী স্বপ্ন সন্ধানে আজও ফেরে ও পাড়ার মেছোরা -চাষীরা কলস কাঁধে আজও ছোটে রমনী কুল দলে দলে। সবই চলে কিঞ্চিত বদলি রুপে আমি শুধু হারিয়েছি উত্তাল ছন্দে ধানের ম ম গন্ধে তোমার দ্বিধাহীন দুরন্তপনা।

কথার কথা ।। বিশ্বাস

এসব নাকি  কথার কথা চারিদিকে হাহাকার কোথাও মেলেনা মানুষের পদচিহ্ন পচা নোংরা দুর্গন্ধময় আস্থা ভুমিতে  বাশি খানা কুড়ায় ক্ষুধাতুর শিশু। ওরা বেজন্মা বলে গালি দেয় খানকি বেশ্যা মাগী বলে দ্বিধাহীন বমি আসে সেসব আচরনের প্রতি মানুষ -আজও হতে পারল না । দোহায় দিয়ে পালিয়ে বাঁচে কলঙ্ক ভয় আমাদের বেহাল দশা। শ্বাস রুদ্ধ হয়ে আসে ঝাঁঝে হায়েনার পদচারনায় পুর্ন বাংলার পথ-ঘাট। বাতাসে চামড়া পিপাসুদের মুখের বিশ্রী গন্ধ । আর কত নিশ্চুপ থাকবে তুমি? পকেটের খুচরো হিসেব নিয়েই ব্যাতিব্যস্ত।  জাগো - জেগে ওঠো কলুষতার বিপরীতে। শৃঙ্খল মুক্ত করতে হবে তোমাকে নিজেই। আর কত ভীত থাকবে তুমি কাঙ্গালিনী? তোমার নীরবতায় বন্দীদশা জট্লা-কুয়াশা। নেই অদম্য সাহস সত্যের জয় কোথা মানুষ চোখ দৃষ্টিহীন, অস্থাচলে মানবতা। ওরাই কয়-এসব নাকি কথার কথা। হীনমন্য জীবনের নেই বিচলতা। এসব নাকি কথার কথা জরাজীর্ন জাতি বিবেক, বুদ্ধিদীপ্ত চিন্তা এখানে অথর্ব গোঁড়ামির চাষাবাদ চলছে হরহামেশা। চলছে অপকর্মের অবাধ বিচরন। একদল ক্ষুধার জালায় কাতরে মরে বাঁচার আশা হাতরে ফেরে। একদল অট্ট হাসি হাসে নষ্টামির ছায়াতলে ...

মাঝ-দরিয়া ।। বিশ্বাস

বিরহেতে বসত বাড়ি ভিটা-মাটি নাই অথৈই জলে ভাসছি হেথা তরী কোথা পাই। মাঝির দেখা পেলেম যদি পাড়ের দেখা নাই কোন কিনারে ভিড়লে খেয়া মনের দেখা পাই। হালকা হাওয়ায় দুলে তরী অদূর পানে চাই ভরসা হেথা মাঝি আমার মেঘে কি আসে যাই। দূর গগনে মেঘ করেছে ভাবনা চিন্তা নাই বজ্রপাতের যুদ্ধ শেষে ফিরব ঘরে তাই।

প্রতীক্ষা ।। বিশ্বাস

যন্ত্রের ষড়যন্ত্র চক্ষুরাঙানী শরীর জালা করে ঘিনঘিন করে। পচাঁ দুর্গন্ধযুক্ত বিকৃত অশুস্থ চিন্তা মানষ যন্ত্র । তাকাতে পারিনা চক্ষু ঝলসে যাবার ভয়। চলতে ভয় বলতে ভয় হাসতে ভয় নাচতে ভয় গাইতে ভয় যন্ত্রনামক বাধ্যবাধকতার ভয়। ভন্ড কুৎসিত কুরুচিশীল দর্শন ভয়। নন্দিত বন্দীদশা ঘোর অমানিষা। পাশে কেউ নেই আমার অদম্য সাহস তাই সঙ্গী আজ। প্রতীক্ষা একটা আলোর ঘর।

নেষার ঘোর ।। বিশ্বাস

বিরাগ ভোজন হৃদয় অদৃশ্য তত্ব লুকিয়ে লুকিয়ে ছল আঁকছো কতোকাল আর কত? নদী কেন বিরহের পথে বলতে পরো বিনোদনহীন থাকতে পারো নোংরামীতে মাততে পারো মহাকাল হিসেব রাখেনা। প্রভাত হেরিলে আলো ছাড়া চোখ কিছু দ্যাখে না কালোর বুকে আলোকে মনে হয় জঞ্জাল ভাঙব তবে বিভেদ বেড়াজাল। চশমাটা আজও রঙিন পরে আছো পিপাশা হীনতা গ্রাস করে বসে আছে অমোঘ ঘোর কি কাটবে না? তৃষ্ণা কি জাগবে না! নাকি নেষার ঘোরে থাকবে মত্ত                                - চিরকাল। পর্বত-হিমালয়ের পথে অগ্রযাত্রা বদলে দিতে দিতে গমন সঙ্গিহীন সাদার ধাধা টুকরো আলো ঘুচিয়ে দিতে পারে অন্ধকার তোমার - আমার।

আপন রাজ্যে রাজা ।। বিশ্বাস

মাঝে মাঝে হারিয়ে যায় দুর দিগন্তে ফেরা না ফেরার কাল্পনিক স্বপ্ন কল্পনায় মন এখানে আপন রাজ্যে রাজা নীলিমার রং ডানা মেলে ছুয়ে যায় হাসফাস শব্দে হাঁপাতে হাঁপাতে ফেরে বাস্তবতায়। একি দেখিলাম আমি! দিধা-দন্দেরা অতৃপ্ত। মিল নেই কোন চরাচরে বালখিল্য চলাফেরায় আচারে । মাঝে মধ্যেই হারিয়ে যায় হারাতে ভাল লাগে ভ্রমহীন অবাস্তবতায়। মিল খুঁজতে গিয়ে গুলায় অমিলে জীবন চলে লোক দেখানোর আদলে। একি আমি চেয়েছিলাম না না এ আমি চাইনি আমাকে বাধ্য করা হয় তোমার চাওয়ায়। কেন? প্রশ্ন করা যাবে না। অমিলগুলো দেখিয়ে দেয়াও যাবে না। এতো আমি চাইনি। চেয়েছি নিজের মত করে বাঁচতে গুন গুন শব্দে ভাসতে সহস্রবার ভালবাসতে মন এখানে আপন রাজ্যের রাজা।

কবি নিরব ।। বিশ্বাস

ওপারে কথার বৃষ্টি বর্ষণ গালির সাথে গুনকীর্তন বিকারগ্রস্থ উদ্ভট চিন্তাচেতন রক্তহোলি নৃত্য নাচন। একি? এতো গন্ডমুর্খ ভন্ডদের শব্দে শব্দে আলোড়ন! এপারের কবি নিশ্চুপ নিরব। ভাবনাগুলো খিলখিল করে হাসে অন্তরালে বিদ্রুপ বিভ্রাটে জানেনা আজও কোন পথে হাঁটে দন্দেরা পড়েছে দূর্বিপাকে। কবি তখনও নিরব।

কবিতা ।। বিশ্বাস

ভাবছিলুম একখানা কবিতা লিখব কিন্তু কি লিখব বুঝে উঠতে পারছিলুম না ভেবেছিলুম কৃষকের কথা লিখব নৌকার মাঝির কথা লিখব জেলেদের কথা লিখব ছেলেপেলের দুরন্তপনার কথা লিখব দারিদ্রের কথা লিখব ক্ষুধার-তৃষ্ণার কথা লিখব পতিতার কথা লিখব অতৃপ্ত প্রেমিক-প্রমিকার কথা লিখব প্রেম-ভালবাসার কথা লিখব নারীর-পুরুষের কথা লিখব হঠকারীর হঠকারীতার কথা লিখব ধনীর দুলাল-দুলালীর কথা লিখব টোকায়ের কথা লিখব মানুষ-অমানুষের কথা লিখব কবির কবিতার কথা লিখব ক্ষমতা যন্ত্রের কথা লিখব কিন্তু কি লিখব ভাবছিলুম ভাবছিলুম জীবন এমন কেন? কেন এত বৈচিত্রময়তা ধরনীর ললাটে। ভাবছিলুৃম কি লিখা যায় সমাধান রুপে- ভদ্র বেশে।

দৃড় প্রত্যয় ।। বিশ্বাস

আবলীলায় বলে দিতে পারি তোর চোখে বিষ রক্তচক্ষু দেখেছি আমি- আত্নক্ষোভ আগুনে আর কত জালাবি নিজেকে তুই! জানি সপ্নগুলো তোর আজও অমলিন। ইচ্ছেরা বড়ই বেমানান। ক্ষুধাতুর পেট- লাথি জুতা আর কত দিন সয় বল! তোর শিরায় শিরায় বিষ তুই কখনো করিসনা কুর্নিশ। অনেকেরই অপমৃত্যু হয়েছে আগেই যন্ত্রনার পাহাড় বুকে ছেপে তুই বেঁচে আছিস অনন্তকাল। মনে রাখিস তোর মৃত্যুতে অন্ধকারে ছেয়ে যাবে চরাচর। নিয়ন আলোয় নিজেকে বারবার জ্বালাস পৃথিবী সহস্রবার বলবে সাবাস সাবাস সাবাস!

জোর ।। বিশ্বাস

চঞ্চল মেঘের হাতছানি- চারিদিকে শুনি এ কি কানাকানি- জানালা খুলে দেখো - একদল কালো আলো হয়ে এলোকেশে মিশে গর্জে ওঠে তারাগুলো দ্বন্দে লিপ্ত বিভ্রান্ত অবিমিশ্র- মেঘের সাথে - প্রস্ফুটিত হতে চাই আলোর বিচ্ছুরন চাই দ্বার উন্মুক্ত চাই ঘুচিয়ে দিতে চাই অন্ধকার। এদিকে কালোর আলো আলো খেলা - মেঘে মেঘে সংঘর্ষ - বিদ্যুৎ ঝলকানি আগুনের ফুলকি ছড়িয়ে পড়ছে চতুর্দিকে পুড়িয়ে ফেলতে চাই ভষ্ম করে ফেলতে চাই চুরমার চাই শৈল্পিক সভ্যতার। তামাসা চলছে নীতি কথার নামে- ভুতের বাড়ি জনাকীর্ন শুভ্রতার ধরাধামে                      - এবেলা ওবেলা। এ যেন গোপালের মুখে রাম-নাম। আলোকে বলে - দাঁড়া ব্যাটা এবার তুই থাম।

শরীরী পাখি ।। বিশ্বাস

পাখিটি আপন মনে গান ধরেছে রঙের মানুষ ও রঙের মানুষ রঙ্গিলা বাতাসে ওড়াও অন্তরের হাউস আমি থাকি ডালে ডালে তুমি গাছের তলে তোমার সঙ্গ না পেলে অন্তর আমার জ্বলে। রঙের মানুষ ও রঙের মানুষ নেসা পেলে ওড়াও তুমি নানান বর্নের ফানুস। শেষে খিচমিচিয়ে ওঠে বিদ্রুপে - চোখ দুটো টগবগিয়ে লাল হয়ে ওঠে- রক্ত চক্ষু দেখেছি আমি। যত্ত সব আবালের দল - শরীর দেখলেই ক্ষুধা বাড়ে সালাদের সব শুয়োরের বাচ্চা - একটা সিগারেট জালিয়ে আপন মন টানতে থাকে। আবার গান ধরে - খুঁজতে থাকে নতুন কোন ঠিকানা- দর কষাকষি চলে বারবার বদলায় -এ হাতে ও হাতে ঘোমটার নিচে খ্যামটা নাচে না এখানে - চলে বিনিময়- মনের নয় - পয়সার সাথে শরীরের।

হতে হতে হয়নি ।। বিশ্বাস

বিরহের সাথে এক রাত ঘর করব বলেছিল বাধা দেইনি - চলে গিয়েছিল -ফিরে চাইনি আমারও আর ডাকা হয়ে ওঠেনি। ক্যামন আছে - জানা হয়না আর খাঁদ ছিল-পার্থক্য ছিল বলেই হয়ত বিচ্ছেদে বরাবর। তোমার কি মনে হয় বালিকা লুকোচুরির সেই দিনগুলো ভুলতে বসাই ভাল- মনে রেখে লাভ নেই - ক্ষতি আছে কি? একদিন মা বকেছিল বলে কি রাগ-অভিমান সব কিছু ছেড়ে চলে আসবে বলেছিল আসে নি - আমারও আর ডাকা হয়নি একদিন নৌকা ভ্রমনে যাব বলেছিল আসোনি - যাওয়াও হয়নি নদীর বুকে হয়নি জল খেলী তোমার সাথে। একদিন বুকে মাথা রাখবে বলেছিল বুক পেতে বসেছিলাম - রাখেনি - আমারও আর বলা হয়নি । চলে গিয়েছিল - কিছু বলে যাইনি আমিও আর শুনতে চাইনি - ওভাবে আর ডাকা হয়নি ময়না বলে।

মুক্ত করো শৃঙ্খল ।। বিশ্বাস

এই সময়ের পথের ধুলায় গড়ায় সারা বেলা এমন নাকি সব খামেতে -উড়ো চিঠির মেলা জ্ঞান পাপীদের মাথায় ঢ্যালা ভাঙছে ওরা কারা ন্যায়ের পথে বললে কথা গোমড়া মুখো যারা। এই সমাজে খেলছে যারা হাট্টিমাটিম খেলা সকাল দুপুর সন্ধ্যা রাতে ভাসছে তাদের ভেলা দলে দলে ভন্ডের নিকট দিচ্ছে সবাই ধরা সত্য পথে আজকে হেথা পড়ছে ভীষণ খরা। প্রেমিক যুগল বসে বসে গড়ছে আপন লীলা রে রে করে উঠছে দ্যাখো মুখোশধারী গুলা মানুষ নামের অমানুষেতে ধরনীর ললাট ভরা জীবন চলার নিয়ম কানুন তাদের হাতে গড়া। মুক্ত পথে হাঁটছে না কেউ করছে সবাই হ্যালা বুঝবে সেদিন পাবে যে দিন চরম রকম ঠ্যালা আলো হীনতায় ভুগবে তুমি কপাট চাবি মারা বস্তা বন্দীর কাটবে জীবন স্বজন প্রীতি ছাড়া।

সব আলো নিভে গেছে ।। কবি বিশ্বাস ( প্রিয় বাবা )

এখন সব আলো নিভে গেছে অন্ধকারে ডুবে গেছে- দেশময়। কবির কবিতা শব্দের জোড়াতালি সাহিত্যকের কথার তামাবলি টাকার জোড়া তালিতে দেশ ভরে গেছে আমলারা সব ময়লা টাকা নেড়ে হাতে- গোগ্রাসে গিলছে নর্দমা খাবার একে অন্যের হকারি তাবিজ কবজ যেন বেলা শেষে জমাচ্ছে ভিড় মসজিদে-মন্দিরে এখন সব আলো নিভে গেছে। নাগরিক আর বুদ্ধিজীবির দল ময়লা সাগরে ডুবছে অতল রাজনীতিকের নেই কোন নীতি অস্ত্র হাতে ধন্য ওদের মতি পূণ্য ভাবে অসৎ পথে সব আলো তো নিভে গেছে।

ধেয়ে আসে ওপার থেকে ।। বিশ্বাস

কে ধেয়ে আসে ওপার থেকে কে তাড়া করে স্বীয়সত্বা বিস্তৃতির অস্তিত্বে ব্যক্ত সত্বার বিলীন চাই কে? ছানা দুটোর অবাধ বিচরন থামিয়ে দিতে চাই কে ধেয়ে আসে ওপার থেকে ভীত হতে হতে গর্তমুখী স্রোতের বিপরীতে কে ডানা ঝাপটায় ক্ষীপ্র গতিতে আকাশের বুকে ছো মেরে গিলে ফেলতে চাই ছানা দুটোকে দ্বিধাহীন ব্যক্ত সত্বার স্বাধীন ফেরা থামিয়ে দিতে চাও কে হে তুমি? নন্দ-ললাটে ভন্ডামী করে কে ধেয়ে আসে ওপার থেকে ছল-চাতুরী কর কেন এত কে হে তুমি? কে ধেয়ে আসে ওপার থেকে পাখির মুক্ত ডানা ভাঙতে চাই কে বন্দী করতে চাই ছন্দের দন্দকে শিকল পরা ছল চাই কে ধেয়ে এসে ওপার থেকে। আমির অস্তিত্বে বিলীন চাও কে হে তুমি পৈশাচিক আনন্দে তৃপ্ত হতে চাই কে কে ধেয়ে আসে ওপার থেকে।

পাবো ।। বিশ্বাস

একটু ছুঁতে চাই স্পর্শ করতে চাই পাবো? ছুঁতে চেয়েছি বলে ভেবোনা বুকে হাত দিতে চেয়েছি শুধু তোমার হাতটা একটু ধরতে চাই পাবো? একটু জড়িয়ে ধরতে চাই আলিঙ্গন চাই পাবো? একটু উষ্ণতা চাই চুমু আঁকতে চাই পাবো? চুমু চেয়েছি বলে ভেবোনা শরীর চেয়েছি ভালবাসার প্রতিচ্ছবি আঁকতে চাই পাবো? মনের গহীন বনে বিচরন চাই স্বর্তহীন পাবো?

টোকাই বচন ।। বিশ্বাস

ছন্নছড়া জীবন আমার অন্ন ছাড়া পেট ক্ষুধার জালা টের না পেলে মাথা হয়না কারো হেট। পেটের জন্যে খানা খুজি রাস্তায়-ডাস্টবিনে টাকার পাহাড় গড়ে ওরা বিবেক-ভাবনা হীন মনে। ঘুম পাড়ি গাছ তলাতে মসা আমায় চেনে তোমাদের তো আরাম হয়না ঠান্ডা হাওয়া বিনে।

দন্দ ।। বিশ্বাস

ছন্দ মনে দন্দ বেঁধেছে ঘুম করেছে আড়ি একলা মানুষ একলা মনে ভাবনায় জমায় পাড়ি। অন্ধ বনে গন্ধে টানে চলে নিত্য হুড়োহুড়ি সভ্য মানুষ সভ্য সমাজ আস্ত বদের ধাড়ি। মিথ্যা আলোয় বন্ধ ঘরে ভন্ড জমায় পাড়ি ওরাই নাকি সঠিক জানে পাল্লা ওদের ভারি। তাল নেই সুর নেই নেই কথার মানে সঙ সেজে বসে আছে কেবা তা জানে। কে বলিবে তোমারে কে ধরিবে হাল ঢং ছাড়ো সঙ ছাড়ো উড়াতে হবে পাল ।

আবদার ।। বিশ্বাস

চপল চলনে হিয়ার নয়নে হাঁটিতে হাঁটিতে সখা দুখানি গোপন মনষ্কথা। কই - কব- কোলাম কিন্তু? ঠোটের উত্তাপে পুড়তে চাই শরীর আমাকে দাহ করো অনন্ত যৌবনা হরিনী তুমি তো নন্দন সৃষ্টি জাত মানব ঈশ্বরী আমি গলতে চাই জ্বলতে চাই শরীর খেলায় শুদ্ধ কর মোরে এটুকুই আবদার। খুব বেশি কি মনুষ্য জাত জননী? চিত্ত বিনোদিনী নন্দিত বন্দিনী।

শহীদ মিনারের জবান থেকে ।। কবি বিশ্বাস ( বাবা )

আমি শহীদের আমি বাঙ্গালির আমি বাংলা মায়ের ভাষার                               আত্ন ...............। আমি প্রতিদিন ভাষা বিনিময় করি পশু-পাখি, প্রানী-উদ্ভিদ সব, সবার সাথে বিশ্ব মানব মায়ের                                      ভাষায় । আমি সৈনিক বিশ্ব মায়ের ভাষার । আমি ততদিন আছি দাড়িয়ে যতদিন এই পৃথিবী নামক গ্রহটি সৌরজগত থেকে খসে না পড়ে।

ব্যার্থ পান্ডুলিপি ।। বিশ্বাস

একটা গোলাপ তোমাকে দিতে চেয়েছি,                                                পারিনি। পাপড়ি গুলো মলিন হয়ে ঝরে পড়েছে একটা একটা করে কুড়িয়ে সযতনে সজ্জিত রেখেছি                                                হৃদয় কুঠোরে। স্মৃতি ক্যামন জানি বিহ্বল প্রায়শই। তোমাকে দেখার আনন্দে গেয়ে ওঠে না                                আমার চঞ্চল মন। দারিদ্রতার আকাশচুম্বি দেহ আমার। খড়কুটোর ঘর বাধার সপ্ন নিয়েই বেঁচে আছি               ...