Posts

Showing posts from 2018

মাটির জন্য

করুনার কাছে সম্মান বলতে আর কিছু বাকী রইল না চাইনা তোমাদের ওই আকাশ ছোঁয়া অট্টালিকা দারুন খেলাই তো খেলে চলেছো শুধু প্রাণ নয় কান চিলে নিয়ে চলে গেলে আর ফেরে না চাইনা তোমাদের মিথ্যা নিয়ে বাঁচার আশা ভালবাসার রংগুলোকে চিনি ভেবে ভুলে ছিলাম ঝংকার নাচনে গাজনের রংগুলো ভিন্ন কিছু নির্বোধ একসাথে মিলে দাপটে ফেটে পড়ে কথায় কথায় ক্ষমতা ফলাতে - সকালের মেঘগুলোকে বিকালে পরে ল্যাম্পোস্টের নিচে দাঁড়িয়ে থাকা যুবক - তার সাথে যুক্ত হয় ওপাড়ার বিলেত ফেরত কতোক ধ্বংশাত্নক তীক্ষ দৃষ্টি নিয়ে ঘৃনা ছুড়ে দেয় মস্তিষ্কে নম্র ভাবে শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের ইচ্ছা বিলীন দিধান্বিত চিত্তে উন্মাদ বিচরন এদিক সেদিক আচরন শব্দটার অর্থ না জানা জানোয়ার ভোর হলে শেখাতে আসে বৈষম্যের বিধি-বিধান চালের টাকায় মদ কেনা - এর ওর কাছে ছিনিয়ে আনা মিলে মিশে রক্ত দেখে - শরীর বেচে সেদিন আর ঘরে ফেরা হয়নি যাদের তারা পাপী তোদের কাছে নিবন্ধিত রক্তচোষা জোঁক লেগে যাবে ভেবে বিকেলের পাগলটা চারটা বাঁশের ব্রিজ বলেছিল হারিয়ে যাবে ভেবে লাভক্ষতির অংক কষে চলেছে মাটির জন্য পাগল হয়ে গেছে যে মাটিতে জন্ম - যার কোলে বড় হয়েছে তাদেরই একাধিক দলে বিভক্তি...

চলো না-হয়

অনেক হল কবিতা লিখন - চলো দুজনে মিলে এবার না-হয় কিছু গান লিখি কিছু প্রেমের কথা লিখি - ভালবাসার কথা লিখি একটা মাত্র গান - তোমার আমার প্রাণ দুজনে মিলে একাকার হয় বৃষ্টিভেজা রাতে ফিরবে না-হয় ঘরে ভোর বেলাতে না-হয় কালকে এপাস ওপাস ঘুরবো মোরা দিন ফুরাবে পথের বাঁকে - মিলব মনের মেলাতে চলো আজকে না-হয় হারাই একান্তই তোমাতে-আমাতে চলো যাই ওপারের মেঘ গুলোকে দেখে আসি দু-জন দু-জনাকে ভালবাসি ভীষন রকম কিছুটা সময় পাশাপাসি বসে থাকি কিছু কথা তুমি বলবে - কিছু আমি ইচ্ছা হলে জড়িয়ে ধরতে পারো - ঠোঁটে ঠোঁট মিলিয়ে চুমু আঁকতে পারো ইচ্ছা হলে চলে যেতে পারো কাল আজকে না-হয় কাছে আসি - ভালবাসি।

বাংলার প্রাণ

খোলা আকাশের নিচে মাঠে তপ্ত রোদে একদল চাষীর ফসল তোলার ব্যস্ততা একদল মাথায় বোঝা টানে - ঘরের পানে একদল নতুন ফসল ফলাতে লাঙল টানে একদল নদীর জল তুলে আনে - বীজ বোনে একদল চারা গাছের আগাছা পরিষ্কার করে একদল নতুন রুপে ভেঙে-চুরে গড়ে একদল কিশোরী ছুটে যাই খাবার হাতে একদল শিশু-কন্যা বাবার মাথায় হাত বুলাই পরম মমত্বে আদর করে পিতার ক্লান্তি নিরসনে একদল ছাত্র-ছাত্রী বাড়ী ফিরে মাঠের সরু আইল ধরে একদল বৃদ্ধ বাবা ছুটে যাই মাঠে সন্তানের কষ্ট কিছুটা কমাবে বলে একদল মা তার সন্তানদের কিছুটা বিশ্রাম নিতে বলে তবু ছেলে ব্যস্ত তার মায়ের জন্য - বাবার জন্যে পিতা ব্যস্ত তার সন্তান-সন্তানাদির জন্যে বছরের দিনগুলোতে যাতে দু-বেলা দু-মুঠো খাবার জোটে এদের জীবনে লালসা বলতে খেয়ে পরে বেঁচে থাকা এরা খেটে খাওয়া মানুষ - এরাই আমার স্বজন এরা হাড়ভাঙা খাটুনির পরে শান্তির ঘুম চাই এরা মাথার উপরে শক্ত ছাউনি চাই এরা ঘর তোলার এক খন্ড ভুমি চাই নির্বিবাদে পাড়ার সকলের সাথে হেঁসে-খেলে বেড়ায় এরাই বাংলার প্রাণ - গড়তে মত্ত - বাধাহীন শ্রমিক-চাষী কামার-কুমার জেলে এরাই আমার ভাই এদের জন্যে বাঁচি যারা - চলুন একটু বদলাই।

এ আমার হার

তুমি হেরে গেছো - এ হার তোমার নারীত্বের এ হার তোমার স্বাধীন সত্বার এ হার নিজেকে ছোট করার। হেরে গেছি আমিও - কেননা তোমার জিৎ চেয়েছিলাম আমি। চেয়েছিলাম প্রকাশ্যে ভালবাসার কথা ব্যক্ত করবে তুমি চেয়েছিলাম অদম্য সাহসিকতায় হাঁটবে তুমি চেয়েছিলাম প্রান খুলে গাইবে তুমি আরও চেয়েছিলাম নিজেকে মানুষ বলবে তুমি। তুমি বোঝনি আমার চোখের ভাষা বোঝনি তুমি ছিলে আমার অথৈই জলের কুল তুমি একা হারোনি - হারিয়েছো আমাকেও।

নির্বাধে মত্ত বোকা

প্রগতির চিন্তা বাদ দিয়ে বরং বোকা থাকো ঘন্টায় ঘন্টায় এর ওর কথামত উঠ-বোস করো তাহলেই তুমি গ্রহনযোগ্যতা পাবে নইলে তোমাকে ডাষ্টবিনে ছুড়ে ফেলা হবে। এই যখন সমাজের রীতি তখন নিজেকে পাগল ছাড়া আর কিছু মনে হয়না জ্বালা-পোড়নের মাঝে বাঁচি আমি ফুসফুসে বোধয় পচন ধরেছে জরাগ্রস্থ এই শরীর কবে যে থেমে যাই সময়ের সাথে অসময়ের পথে ঘোরে - আমার সমস্ত জাগরনী সত্তা কলি হয়ে ফুটবে ধরনীর বুকে ভেবে জয়ের নেষায় নির্বাধে মত্ত সে।

এক নির্বোধ

জংধরা অলি-গলির এই শহরে আমি এক নির্বোধ যে ভুল খুঁজে বেড়ায় যা কিছু দেখি - প্রশ্ন দাঁড়িয়ে যাই মনে। একবার এক বস্তিতে আগুন দেখে মনে হয়েছিল - এটা খুঁটে খাওয়া মানুষের জীবন নিয়ে খেলা বৈ কিছু নয় তিন তলায় ছিলাম তখন - অকাজে কাটত সময় অভ্যেস গুলো অনেকটা বদলে গেছে না খেয়ে সারাটা দিন ঘুমিয়ে কাটাই দু-বেলা গড়িয়ে গেছে। গভীর রাতে ছাদে বসে থাকা হয়না অনেকদিন আকাশের নানা রং দেখিনা - কি সব উদ্ভট চিন্তা নিয়েই গড়িয়ে যাই বেলা তবু তোমার স্মৃতিগুলো সরছেনা মন থেকে।

ক্ষুধা

এ দেখি এলাহী কারবার - ঘন্টায় ঘন্টায় বদলায় এ হাতে ও হাতে বিষে বিষাক্ত হয়ে উঠেছে ধারা ক্ষমতার লড়ায়ে বিষ বানাই - চলে জীবন খেলা। কিছু জীবন ক্ষুধার্ত থাকে - দাবার চাল হয়ে জীবনভর। খেয়ে না খেয়ে বেলা গড়িয়ে যাই উদ্ভ্রান্তের মত হাঁটতে থাকি এদিক সেদিক। এদের জীবনখেলা দেখে দেখে আমি ক্লান্ত - ক্ষান্ত - উগ্র - রাগান্বিত হই তবু কিছু দগ্ধ রং দেখা বাকী রয়ে গেছে। অসহায় অক্ষম পঙ্গু হয়ে বাঁচে কিছু জাল বিষের টাকা নিয়ে ওরা ফুর্তি করে। প্লেটটা হারিয়ে গেছে - চুরি হয়ে গেছে একটু ফাটা ছিল - ওতেই চলে আমার। পকেটে টাকাহীন ক্ষুধার্ত পেটে ঘুরে বেড়ানো কি যে যন্ত্রনাদায়ক তা কেবল ক্ষুধার্তই জানে। অথচ ক্ষুধা নিয়েও ব্যবসা চলে এখানে অথচ কিছু মাটির জন্য ক্ষুধার্তই থাকে এরা সোঁদা-মাটির গন্ধ খুব ভালবাসে।

পাগল

লাশের বোঝা বয়ে বেড়াতে বেড়াত সে পাগল। তিলে তিলে মরতে হয়েছে ভাইকে লাশটা পর্যন্ত দেখার সৌভাগ্য হয়নি গভীর রাতে একদিন গিয়েছিল ভায়ের কাছে কতোনা আদর যত্নে রেখেছিল সোনামুখটা এখন আর নেই - হারিয়ে গেছে অসহ্য যন্ত্রনা নিয়ে ঘুমিয়ে আছে মাটিতে বাবাকে ভায়ের পাশে দাফন করেছে নিজ হাতে ছেলেটা এখন ঘোরে-ফিরে পাগলের বেশে।

চিন্তামগ্ন

এতটাই চিন্তামগ্ন থাকি সর্বক্ষন এতটাই বিষন্ন সারাক্ষন সবটাই তোমাকে ঘিরে - স্মৃতির জুড়ে। কার সাথে কিভাবে কথা বলতে হয় ভুলে যাই প্রতিনিয়ত নতুন কিছু খুঁজি - নতুন কিছু বুঝি। ব্যবসার বেড়াজালে রক্তাক্ত হয় শরীর খুন হতে হয় বৃদ্ধ বাবাকে। ভিক্ষা এখানে ব্যবসা হয়ে দাড়িয়েছে কেউ রাস্তায় - কেউ প্রাচুর্য গড়ে তুলেছে। আমার সকল অনুসন্ধান - সমস্ত সত্তায় কিছু বিভ্রান্তি খুঁজে পায় প্রতিক্ষনে।

একজন শিক্ষক

যিনি খুন হয়েছেন - যিনি ঠোঁটের কোনে মুচকি হাঁসি এঁকে গিয়েছেন তিনি একজন পিতা একজন কবি - একজন মানুষ একজন বনমালী একজন জাগ্রত জাতি স্বত্তা যিনি উন্নয়ন চেয়েছিলেন শিক্ষার প্রতিষ্ঠা করে গিয়েছেন লাইব্রেরী স্কুল কলেজ খেলার মাঠ - নাটকের মঞ্চ সংস্কৃতির ধারা অব্যাহত রাখতে চেয়েছিলেন যিনি সকলকে এক সঙ্গে নিয়ে বেঁচেছিলেন জাত-ভেদহীন মিশে ছিলেন সকল সম্প্রদায়ে যিনি একজন চাষী - একজন কৃষক গায়ক - শিক্ষক - সর্বোপরি একজন মানুষ যিনি পঙ্গু হয়েছিলেন শত্রুর হাতে এই সমাজ যাকে খুন করেছে শেষে তিনি আমার শিক্ষক।

দেখেছিস এসব কখনো

শহরের অলিতে গলিতে তোকে নিয়ে ঘুরব ঘুরবি আমার সাথে - কখনো রিক্সায় কখনো-বা পায়ে হেঁটে যাবি আমার সাথে - দুর্গত জীবনগুলোকে দেখতে কতোটা অসহায় হয়ে বাঁচে ওরা ময়লা-আবর্জনার পাশে শুয়ে থাকে কোনমতে খেয়ে - না খেয়ে বাঁচে রেলনাইনের ঐই বস্তিগুলো দেখেছিস পার্কের পাশে পড়ে থাকা মানুষগুলোকে দেখেছিস অসহায় বৃদ্ধ পঙ্গু ভিক্ষারত জীবন দেখেছিস ডাস্টবিনে খাবার খোঁজা পাগলটাকে দেখেছিস ওভারব্রিজের নিচে ঘুমিয়ে থাকা শিশু দেখেছিস কটা পয়সার জন্য শরীর বিক্রি হতে দেখেছিস ডোবার নোংরা জলে মাততে দেখেছিস বস্তির ছেলেপেলেদের দল বেঁধে মনে হয়না এসব কখনো দেখেছিস তুই আজো বুঝিনি কি করে তোর হৃদয়টাকে ছুই।

সমস্যা

শেকড় গজিয়ে এত গভীরে চলেছে বুঝিনি আগে - ওরা সব মিথ্যার পিছে ভাগে কিছু মুকস্থ কথা বারবার বলতে থাকে আলোহীন ঘরে বন্দী করে রাখে সুর্যের আলো এদের ভাল লাগেনা দু-চার কথায় ব্যস্ত - জানতে অনীহা না বুঝেই উত্তর দিতে দিতে যাই অস্ত।  সবকিছুতেই সমস্যা খুঁজে বেড়ায় গানে সমস্যা - নাচে সমস্যা পোশাক-পরিচ্ছদে সমস্যা চিত্র-কর্মে সমস্যা - কলায় সমস্যা রোদ্রের আলো গায়ে মাখতে সমস্যা উঠতে সমস্যা - বসতে সমস্যা উদ্ভট যত মানসিকতা নিয়ে বাঁচে কবে! কবে এদের জানার আগ্রহ হবে।

নিউরনে তুমি

বারবার তোমার কাছেই ফিরে আসি সহস্রবার স্বপ্নে জাগরনে তোমাকেই ভালবাসি অথচ তুমি বোঝনা নাকি না বোঝার ভান করো! তুমি কি চাও আমি চলে যাই সবকিছু ভুলে নিজেকে হারাই না দেখে থাকতে পারি - কাটিয়ে দিতে পারি অজস্র রজনী ভুলে যাওয়া যাবেনা কোনদিন। আমার সমস্ত নিউরনে তোমার বিচরন সমস্ত কাজ থেমে যাই তোমার নামে আজকাল ঘুমায়তেও পারিনা ঠিক মত এভাবে এত যন্ত্রনায় আর কাটবে কত। প্রতিনিয়ত মিথ্যার আন্ধকারে তলিয়ে যাচ্ছি হারিয়ে যাচ্ছে আমার সততার ভীত আমাকে, আমার নিষ্ঠাকে বলিদান দিয়েছি তোমার নামে তবু তুমি বুঝলেনা - কবে এ যাত্রা থামে।

ধুয়ে মুছে যাক

জয়-পরাজয়ের খেলায় তুমি মত্ত হেরেছি জিতেছি আশার আসে অথচ আজও জানিনা তোমার শর্ত। চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে দুর্গন্ধ ধীরে ধীরে পথগুলো ছোট হয়ে আসছে সজীব সুবাসে উজ্জীবিত হোক ধারা ধুয়ে মুছে যাক ধরনীর যত জরা। মাকড়াশার জালের মত গজিয়ে উঠেছে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ছে চারিদিকে বুলেট সেদিন আমি একটা কুড়িয়ে ছিলাম সোনালী রঙের ছুঁচালো ক্ষুদ্র ছিল মাথা। প্রতিনিয়ত শিখছি নতুন করে সময়ে অসময়ে দেখেছি ভেঙে-চুড়ে গড়ে শুধু মাত্র তোমাকে কাছে পেতে চাই বলে।

ব্যর্থ ছেলে

ছেলেটা হারিয়ে গিয়ে - সবকিছু ভুলে গিয়ে জনাকীর্ন পথে পা ফেলে ধাপে ধাপে এগোচ্ছে থেকে থেকেই বাধা পায় চারিপাশ হতে পেছন থেকে বলে ওঠে - এবার আর তোকে কেউ বাঁচাতে পারবে না প্রচন্ড হাসি পায় ভেতরের অন্তর - যে মৃত্যুকে ভয় পায়  সেতো প্রতিনিয়ত প্রতিক্ষনে প্রতিমুহুর্তে মরে বারবার হাজারবার মরে।  বুকের সমস্ত জ্বালা যন্ত্রনা ঝেড়ে ফেলে ধাপে ধাপ ফেলে এগিয়ে চলেছে ব্যর্থ গুটি গুটি পায়ে - মুক্তো হয়ে এগিয়ে চলাই যেন তার অন্তিম স্বার্থ।

আজও হয়ে ওঠেনি

কত কথা আজও রয়ে গেছে বাকী তুমি হারিয়ে গেছো - কোন কারনে দিলে মোরে ফাঁকি এখনো তোমায় বারবার পিছু ফিরে ডাকি। রয়ে গেছে বাকী তোমায় চেনা তুমি থাকো কোথায় - কোথায় তোমার বাড়ী আজও আমার হয়ে ওঠেনি জানা সবকিছুই থমকে গেছে - চারিপাশ করছে মানা। বাকী আছে চাবির দেখা পাওয়া জীবনের জয়োরথে তোমার সাথে গান গাওয়া তুমি কাছে নেই বলে তোমাকে ঘিরে আমার সকল যাতনা। কতো কথা রয়ে গেছে - কতোটা জানা রয়ে গেছে বাকী বলে তোমার সন্ধানে হয়নি আমার থামা ।

বরাবর রাষ্ট্র

দেশের সমস্ত সৃষ্টিশীল চেতনাকে ধ্বংশ কর ধ্বংশ করতে চাও পুরাকির্তী - হারিয়ে গেছে জাহাজ-বাড়ী তলিয়ে যাক অন্ধকার মোহের গহ্বরে তাতে তোমার কি? তুমিতো লাভ-ক্ষতির অংক কষো মিছেমিছি কেন এই ধ্বংশের খেলা যে ধ্বংশের পক্ষে কথা বলে যে তার জন্মের উদ্দেশ্য ভুলে তাকে স্বার্থান্নেষী ছাড়া আর কি বলা যাই গন্ডির কাছে বাহবা পাচ্ছো - ভালো কথা কিন্তু উপায়টা কি ভিন্ন হতে পারতো না কোন পথে এগোচ্ছে ভেবে দেখছো না কতোটা পিছনে ফিরে গেলে তুমি ক্ষান্ত হবে আর কতোটা বোকা হলে থেমে যাবে।

মনে পড়ে

মনে পড়ে সেই রাতের কথা সেদিনের সেই কালো মেঘে মেঘে দ্বন্দ ধুলো উড়িয়ে ঝড় বাদলে তীব্র বজ্রপাত দৌড়ে গিয়ে কুঁড়ে ঘরের তলে কোনমতে দাঁড়িয়ে আশ্রয় - একটু ঠাঁই । মনে পড়ে সেই বিকেলের কথা আনমনে গেয়ে গান ভাঙিয়ে ছিলে নীরবতা মন আনন্দে ভাসিয়ে ছিলে সুপ্ত ব্যথা খোলা মনে হেঁটেছিল ওপথ ধরে - গলির মোড়ে দাঁড়িয়ে একা। মনে পড়ে সেই দিপ্রহরের কথা রোদের মাঝে বসেছিলে নয়নে নয়ন মিলিয়ে চেয়েছিলে ছুটে এসেছিলে দুর-দুরান্ত পেরিয়ে - যদি চলে যায় - আর যদি না পায় দেখা। মনে পড়ে সেই আলো ফোটা সকালের কথা কিশোরী রুপে দাঁড়িয়ে ছিলে তুমি আর আমি চেয়েছিলাম দগ্ধ রুপমোহে ইশারায় বার বার কাছে আসতে চেয়েছিলে - ব্যথা ভুলিয়ে ছিলে।

অক্লান্ত তরুন

ফাঁকা পকেটে রাস্তায় হেঁটে চলেছে তেজদ্বীপ্ত তরুন তাকে পৌঁছাতে হবে তার কাঙ্খিত গন্তব্যে রাস্তার পাশের নোংরা ময়লা গন্ধের মধ্যে থেকে শব্দ ভেসে আসে " একটু কাগজ দিবেন " যুবক থমকে গিয়ে দেয়াল থেকে কিছু লাল-সবুজ পোস্টার ছিড়ে দেয় কাগজের টুকরাগুলো হাতে নিয়েই বলতে থাকে - চারিদিকে ময়লা - সারা শরীরে ময়লা দেশটা একেবারে নোংরামীতে ভরে গেছে যুবক হাঁটা ধরে - ক্ষুধার্ত পেট তার তবু মনে জোর নিয়ে অক্লান্ত ছুটে চলেছে কিছুটা পথ পেরিয়ে দেখে - এখানেও কিছু রাজ্যহীন রাজকুমার দেখে কিছুটা স্বস্তি মেলে মনে আরও কিছুটা পথ বাঁকি - তাকে পৌঁছাতে হবে মায়ের কাছে তাকে নর্দমার কোলাহল সরিয়ে পৌঁছাতে হবে প্রেমের কাছে হতে হবে কালজয়ী ভালবাসার তেজদ্বীপ্ত তরুন।

পরোয়া করি না

আমি রনাঙ্গন থেকে ফিরে এসেছি আমি মৃত্যুকে বুকের বাম পাশে রেখে ঘুরে বেড়িয়েছি আমি বুলেট দেখেছি ভাইয়ের রক্ত মেখেছি আমি আলো-আঁধারে নিস্তব্ধ দন্দে মগ্ন থেকেছি। আমি নিজেকে নিজেই বার বার পড়ে দেখি - পড়তে থাকি অনবরত আমি আমাতে মগ্ন থাকি অবিরত আমি ছুড়ে ফেলেছি বদ্ধ পুরোনো ক্ষত আমি কেবলই আমার মত। আর কত ভয় দেখাবিরে তুই আর কত ভন্ড সেজে হৃদয়টাকে ছুই তুই কি জানিস না তোর কল্পনার জগৎকে!! ভয়কে আমি পরোয়া করি না।

তোমার কিছু যাই আসেনা

ভালবাসা সব পড়ে থাক দিনগুলো সব বৃথা যাক তাতে তোমার কোন যাই আসেনা কেননা আপন ভুবন গড়ায় মত্ত তুমি আর আমি ভুলে ভরা জীবনের তলায় তলিয়ে যাই। মন ভেঙে চুর্ণ-বিচুর্ণ হয়ে যাক পাষাণ হৃদয় পুড়ে ছাই হোক তাতে তোমার মনে দাগ কাটে না কেননা আভিযাত্যের-প্রাচুর্যের রাণী তুমি আর আমি কৃষকের ছেলে পাড়া গাঁয়ে জন্ম আমার। রাতের গায়ে চোখ মেলে দেখি আকশের তারা গুলো মিটিমিটি জ্বলছে সহস্রবার ভালবাসতে বলছে তবু হৃদয় জ্বলে যাক - ক্ষত বিক্ষত হোক তাতে তোমার কোন কিছুতেই যাই আসেনা কেননা তুমি তোমাকে নিয়েই ব্যস্ত।

লড়াই আর কতকাল

যতটা দেখে বেঁকে এঁকে বেড়ায় তার চেয়ে অধিক অন্ধকারে ছেয়ে আছে পবিত্রতার নামে নোংরামীর লীলাখেলা নিয়মের নামে - রীতি নীতির নামে ভদ্র মহাদয়গনের অপকর্মে তলিয়ে যাওয়া ভ্রষ্ঠ পথে নেমে গিয়ে পাপ-পুণ্যের বিচার করা দান পাত্রের ছায়াতলে ঠাঁই খোঁজা অল্প কথায় ব্যস্ত থেকে বিভ্রান্তির সৃষ্ট করা শোনা কথা শোনা গল্প নিজের মত করে বানিয়ে বলা এরা সৃষ্টশীলতার পথে বাধা দিতে ব্যস্ত হয় কল্পনার জগৎকে আঁকড়ে ধরে বসে থাকে নতুন কে জানতে - গ্রহন করতে নারাজ। কবে বুঝবে - প্রতিটি শব্দ মানুষের কন্ঠনালী থেকে প্রতিটি গ্রন্থ মানুষের অন্ত থেকে প্রতিটি শিল্প মানুষের মনের রং থেকে শব্দের ভাষার উচ্চারন ভিন্ন হতে পারে দেহের গঠন ভিন্ন হতে পারে গায়ের রং ভিন্ন হতে পারে চিন্তা ধারা ভিন্ন হতে পারে আকৃতি কিন্তু একই - তবু একে অন্যকে ছোট করতে ব্যস্ত সবাই নিজেকে শ্রেয় বলতে ব্যস্ত ভেদাভেদ তৈরিতে মত্ত একে অন্যকে আঘাত করে - হেয় করে বলি কি থাকুন না বাবু নিজেরটা নিয়ে হেঁটেই দেখুন না হয় পায়ে পা মিলিয়ে পক্ষপাতিত্ব ভুলে গিয়ে অস্ত্র ফেলে দিয়ে - বন্ধু হয়ে আপনাদের এই ক্ষমতার লড়াই আর কতকাল চলবে।

প্রথম দেখি যেদিন

সেই প্রথম যেদিন তোমায় দেখেছিলাম সেদিন তোমার অস্ফুট চোখের চাহনী তোমার অপলক বাঁকা চোখের তাকিয়ে থাকা ভাঙা চেয়ারটায় পায়ে পা তুলে বসে থাকা কোন এক অজানা কারনের অপেক্ষা আমাকে তোমার প্রেমে পড়তে বাধ্য করেছিল আমি মুগ্ধ হয়েছিলাম তোমার পানে এক পলক চেয়ে আমার সমস্ত সত্বা বলে উঠেছিল তোমার থেকে সুন্দর রুপে প্রকৃতির আর কাউকে সাজতে দেখেনি সেই থেকে আমি তোমার প্রেমে সেই থেকে প্রতিনিয়ত প্রতিক্ষনে নতুন ভাবে পড়ে মনে।

কাউকে তো দেখিনা ।। বিশ্বাস

অনেকগুলো প্রশ্ন মনে ঘুরে ফিরে তুমি কি কাছে এসে বলে যাবে কি করব আমি - কোথায় গেলে কার কাছে গেলে মিলবে সন্ধান তোমাকে ছাড়া আর তো কাউকে দেখিনা অর্থাভাবে খেয়ে না খেয়ে দিন যাই পাওনাদারের কষাঘাতে জর্জরিত হৃদয় পড়ালেখাটা আর বুঝি হল না এত কিছু করি তবু আমি বেকার পাগলের বেশে থেমে গেছে সকল দ্বার কোথায় যাব আমি - কি করব? তুমি কি কাছে এসে বলে যাবে তোমাকে ছাড়া কাউকে তো দেখিনা আর।

যা কিছু চাই ।। বিশ্বাস

অনবরত শব্দ জুড়ি শব্দের সাথে - কি বলছি কি করছি - কতোটা জমেছে ক্ষত আমি কেবল শুনে যাই - ভুলে হারাই এদিকে যে যার মত বলতে ব্যস্ত জেনেছে যতটুকু তার চেয়ে বেশি বলে বেশি জানার ভাব-ধারা এদের বেশ রপ্ত আমি চুপচাপ দেখে যাই - ভুলগুলো খুঁজে বেড়াই - শুদ্ধ-অশুদ্ধের দ্বন্দে হারাই - জানার আগ্রহ বাড়াতে গান গাই - টুকরো আলোর দীশা চাই পরিবর্তন চাইতে গিয়ে অপরাধী বনে ছিলাম সেদিন আমাকে খাঁচায় বন্দী করা হয়েছিল আমার হৃদপিন্ডটা ছিনিয়ে নেয়া হয়েছিল আর ফিরে পাইনি - পাবো কি না জানিনা তবু আমি গেয়ে যাব মনুষের তরে গান তবু আমি হারিয়ে যেতে চাবো তোমাদের তরে থাকব মগ্ন দিয়ে যেতে সজীব নতুন প্রান আমার সকল ভাবনা চেতনা জুড়ে তোমাদের মুক্তির আওভান।

তবু এলে না ।। বিশ্বাস

যন্ত্রনার চাদরে মোড়া শরীর আমার যা কিছু আছে কিংবা নেই সহস্র কাল রবে একান্তই তোমার তুমি ভুলে যেতে পারো - আমি ভুলিনি স্বপ্নে ঘুমে জাগরনে তাড়া করে হারিয়ে যাওয়া সেই দিনগুলোর কিছু মুহুর্ত যার পুরোটা জুড়ে ছিল তোমার আনন্দ কেতন নির্বাদ ওপথে লোকারন্যে সমাগম আমি ভুলিনি প্রিয় স্মৃতি বিজড়িত সেই দিনগুলো আমার মত কে আছে এমন হতভাগা শত বেদনার মালা গেঁথে রেখেছি তোমাকে শোনাবো বলে আমি একাধারে বলতেই থাকব তুমি শুনতে শুনতে বিরক্ত হয়ে উঠে চলে যেতে চাবে ঘুমিয়ে যাবে পাশ ফিরে আমার কথা কেড়ে নিতে ব্যস্ত হবে  তবু তুমি এলে না ।

স্বপ্ন সাজাও ।। বিশ্বাস

স্বপ্ন নিয়েই জেগে আছো গড়েছো স্বপ্নের এক বাসা আমাকে আর কি প্রয়োজন ফুরিয়ে গেছে তোমার ভালবাসা। তুমি পাখির মত উড়াল দাও ডানা মেলে সাজাও - মনে রেখো - গড়তে ভুলেছো দুঃখের স্মৃতি খানি তোমার সুখেই স্বপ্ন আমার জানি। মুক্তির ছোঁয়া লাগাও প্রানে মন ভরে যাক ব্যাথার গানে তবু তুমি ফিরবে না লক্ষ্য ছেড়ে তাদের কাছে নত নয় নিতে চায় যারা কেড়ে।

পরিচয় ।। বিশ্বাস

আমার প্রথম পরিচয় আমি বাঙ্গালী জন্মেছি আমি বাংলা মায়ের কোলে আমার দ্বিতীয় তৃতীয় সমস্ত পরিচয় আমি মানুষ বড় হয়েছি কিছু মানুষের ছোঁয়া পেয়ে যারা আমাকে কখনো ভেদাভেদ শেখায়নি যারা আমাকে স্বাধীন ফেরায় খুব বেশি বাধা দেয়নি।

আমি বন্দী ।। বিশ্বাস

মন মেজাজ খারাপ হলেই হাঁটি আমি একা জনসমুদ্রে পা দুটো যখন হাঁপিয়ে ওঠে ক্লান্ত হয়ে যখন ফিরি ঘরে - চিরাচরিত যন্ত্রনার ভাগাড়ে এক বুক আর্তনাদ জমে নীরবে ভেতরটা অতৃপ্ত থাকে কতোক্ষন।  বিকারগ্রস্থ চরিত সমাজের ভীতি উদ্ভট যত নিয়মের রীতি আমাকে বন্দী করে রাখা হয় আমাকে কারনে অকারনে জ্বালায় আমিতো কিছু বলছি না আপনাদের তবে কেন এই জ্বালাতন কেন এই অবরুদ্ধ আচরন। বেশি কিছুতো চাইনি তোমাদের কাছে ভয়হীন ঘুরে ফিরতে চেয়েছি আমি কি বন্দীই রয়ে যাব কেন এই বন্দী দশা নিজের ইচ্ছায় যেখানে চলা দায় সেখানে ঘিরে থাকে অঠেল হতাশা।

দেখেছো কি গাঁয়ের জীবন ।। বিশ্বাস

দ্বিগন্ত বিস্তৃত ফসলের মাঠে চৈত্রের দুপুরে তপ্ত রোদে গায়ের তৈলাক্ত ঘাম ঝরিয়ে যারা ফসল ফলায় যারা তোমার জন্য গড়ে তাদের জন্য তুমি কোথায়। দেখেছি খাঁখাঁ করা ফসলহীন মাঠ জলহীন কর্দমাক্ত পুকুর অল্প গাছের ছায়ায় হাঁপিয়ে ওঠা চাষী নদীর জলে খর রোদে জেলে মাছ ধরায় ব্যস্ত জীবিকার তাগিদায় আরও দেখেছি ফসলের মাঠে জ্বলের কলে - জলরাশির ধারার তলে দুটি পাখির মুক্ত বিচরন - প্রেম আলিঙ্গন। তুমি বোধ হয় এসব দ্যাখোনি - দ্যাখোনি কি করে বেঁচে আছে কোনমতে পেট পুরে।

খোলা চিঠি ।। বিশ্বাস

প্রিয়, ভীষন ভালবাসি তোমাকে। কতটা ভালবাসা যাই, কিভাবে হৃদয়ের ডাকে সাড়া পাওয়া যাই জানা নেই। কি করলে - কিভাবে জানালে তাকে ভালবাসা বলে সেটাও জানিনা, কোনদিন জানা হবে কিনা সেটা নিয়েও সন্ধিহান। আমার সকাল দুপুর সন্ধ্যা রাত সমস্ত জুড়ে তোমার স্মৃতির বিচরন। বারবার হৃদয় পটে ভাসে তোমার ঐ চকিত চাহনীর দুটো চোখ জুড়ে সমস্ত অববয়। আমার মস্তিষ্কের প্রতিটি কোষের পরতে পরতে তোমাকে ঘিরেই আলোড়ন ওঠে। যতবার প্রত্যাখ্যাত হয়েছি ততই গভীরভাবে ভালবেসেছি তোমাকে। আমি আর পারছি না দুরত্বের এই অসীম জালা কাঁধে বয়ে বেড়াতে। আমার দৃষ্টি জুড়ে কেবল তোমার বসবাস। যেদিকে তাকাই যেদিকে যাই তোমাকেই খুঁজি। তুমি কি ফিরবে না আমার যন্ত্রনা কাতর শহরে। বড্ড ভালবাসি-রে তোকে কি করে বোঝায় - দিন যাই অসুখে। ইতি বিশ্বাস

বিষ বেদনার জ্বালা ।। বিশ্বাস

দীপ্রহরের রোদে হাঁটি আমি একা দিন গুনে চলি তুমি আসবে বলে মায়ের আঁচল তলে মিশে গেছে কিছুটা আঁধার কিছুটা রয়ে গেছে তবু দ্রোহের শরীর অবোধের মত আচরন করে এরা ওদের আচরন এমন - মনে হয় ভ্রান্ত আমি কি চেয়েছি - নিজের মত করে বাঁচতে চেয়েছি কি পেয়েছি - শুধু অবজ্ঞা ছাড়া!  আমার স্বপ্নের কিছুটা হারিয়ে গেছে ঝরে পড়েছে অবেলায় অকালে তোমার জন্য সাধের বলিদান অনাআসে তবুও আজও তুমি দুরেই রয়ে গেলে - আর আমার শরীর মন সয়ে চলেছে তীব্র বিষ বেদনার জ্বালা আমি নিতান্তই সাধারন হতে গিয়ে তোমার পানে অপলক চেয়ে থেকেছি দুর থেকে কথা কয়েছি - বোঝ কিনা জানা হয়নি। কাছে আসতে গিয়ে হোঁচট খেয়েছি আবার নিজেকে সামলে দাঁড়িয়েছি তবু ঘুরে ফিরে সেই একই কষ্ট না পাওয়ার জ্বালাটা দাউ দাউ জ্বলে হারিয়ে গেছে আমার রাতের ঘুম অপেক্ষায় থাকি ঐ কপোলে দিব চুম তবু তুমি এলে না আমার কাছে বললে না ভালবাসি আজও তোমায়।

ভ্রান্ত এই সমাজে ।। বিশ্বাস

কাকে ভ্রান্ত বলছেন - কাকে উগ্র বলছেন! যে অন্যের হাতের পুতুল যে মৃত্যুর দ্বার প্রান্ত থেকে ফিরে এসেছে এক বুক সাহস নিয়ে - ভালবাসা নিয়ে - যে চাইনি নিরীহ কারো ক্ষতি হোক যে আদর্শের লড়ায়ে নিজেকে বলি দেয় মুহুর্তে যে অনেক শব্দ চাপা স্বরে লুকিয়ে রাখে যার বুকটা প্রতি ক্ষনে ক্ষনে চিরে যাই যার অন্তরে অতৃপ্ত জ্বালা ধরিয়ে দেয় যার সময় গুলো বৃথা আক্ষেপে ফেটে পড়ে যে চেয়েছে পরিবর্তন - যে পুরোনোকে ভেঙে নতুন করে গড়তে চেয়েছে যে দ্বিধাহীন পথে পথে ঘুরে বেড়িয়েছে যে ক্ষুধার পেটে দুমুঠো ভাত দিতে চেয়েছে যে এক বুক হাহাকার নিয়ে বেঁচে আছে আজও যার তীব্র বেদনার জ্বালা সেই জানে কতটা অতিকায় ক্ষুদ্র জীবন।

দু-চারটে লাইন ।। বিশ্বাস

তোমার মত আমিও সেদিন হারিয়ে ছিলাম অজানা গহীন বনে এখন অত কিছু আর পড়েনা তেমন মনে। ভালবেসে হারিয়ে গেছে লজ্জা আমার আমি এখন তোমার কাছে নিতান্তই এক কামার যারা লোহাকে আগুনে পুড়িয়ে পিটিয়ে অস্ত্র বানায়। জানার জন্যে আগ্রহ থেকেই যাচ্ছে সারাটা দিন চলে যাই না পড়ে - না বুঝে কোন কিছুই করা হচ্ছে না আমাকে দিয়ে এই দু-চারটে লাইন লিখা ছাড়া। ছাদের গাছটায় জুড়ে বসেছে একটা কাক ডানা ঝাপটায় - হঠাৎ উড়ে গেল অনবরত ঝরঝর ঝরছে জলের ধারা মেঘেদের গর্জন থেমে গেছে গুনগুন শব্দে গান ধরেছে ঢেলে দিতে। ভিজছে শহর শীতল জলে শীতল হবে ধারা - মন আমার তোমাতে বিভোর তোমাতে হারিয়ে হয়েছে ছন্দহারা।

কটা চরন তোমার নামে ।। বিশ্বাস

আর কতদিন চলবে তোমার ছলনা কত দিন আমি বেদনার বৃষ্টি জলে ভিজব কত শত হাহাকার নিয়ে বেলা গড়ায়। মেঘেদের গর্জন বিকেলের আকাশে ফোঁটা ফোটা জল ঝরে উঠানের পরে। জানালার ফাঁকে বাড়ি খেয়ে লেগেছে গায়ে কিছু খোলা আকাশের নিচে বৃষ্টি জলে ভিজব বলে সেই কবে থেকে ছুটছি তোমার পিছু। তোমার নামে রক্ত ঝড়ে পাজর ফাটে অস্ফুট চোখের ধুর্ততা দিয়েছিলে নির্বাক তাকিয়ে থাকার শক্তি দিয়েছিলে নিয়েছিলে হৃদয়ের বটমূলে মুক্তির ছায়া। আমি সেই দেখে আরো গভীরভাবে তোমার প্রেমে পড়েছি - ভেঙে গড়েছি।

একদিন বুঝবে ।। বিশ্বাস

ধুর ছাই - তুমি নাই - তাতে কি? এক বুক ভালবাসা নিয়ে বেঁচে আছি এক বুক হাহাকার নিয়ে কাটে অযথা সময় জেনে গেছি - জীবনটা আর আমার নাই তাতে কি? আমি না হয় অন্যের হাতের পুতুল হোক সব আমার ভুল আমি নিশ্চুপ থাকতে চেয়েও পারিনা নিউরনগুলো ভীষন পীড়া দেয় উত্তেজিত করে ফেলি নিজেকে লুকিয়ে বাঁচতে চেয়েও হয়ে ওঠেনা বারবার অযৌক্তিক কথার বেড়াজালে নিয়মের বেড়াজালে শেকল পরাতে উদগ্রীব চারিপাশ ঘৃনা করছে - ধিক্কার দিচ্ছে দিক - কোন একদিন হয়তো বুঝবে সেদিন হেরে যাবে তোমাদের শত লাঞ্চনা সেদিন আমার সমুদ্রে ভাসবে - লোনাজলে অদ্ভুত এক সাধে সাধবে।

প্রলাপ 3 । । বিশ্বাস

মহাকালের অভিযাত্রী হয়ে ঘুরে পথে - কতকাল ছুটতে হবে জানা হতে এখনো বাকী যে যার মত বলছে - বাকীর নাম ফাঁকি যারা বলছে তারাই আবার ফাঁকি দিতে মত্ত। আজীবন ফাঁকি দিয়ে যাদের কাটে তারাই অন্যকে শেখাতে আসে। একই ঘ্যান ঘ্যানানির বচন - জানতে অনীহার নির্বোধের দল ছোট ছোট বাচ্চাদের হাতে ক্ষুরধার তুলে দিতে দ্বিধাবোধ করেনা নিজেদের আচরনও সেই বাচ্চাদের মতই।

ছুটছি তোমার পিছু ।। বিশ্বাস

কিছু স্মৃতি কখনোই মুছে যাবার নয় তোমার নির্বাধ বিচরন - তোমার চঞ্চল আচরন তোমার বাঁকা চোখের অস্ফুট আঁখি চোখের সামনে ভেসে উঠলে প্রচন্ড পীড়া দেয় হৃদয় আঙিনায়। আমি ভুলতে চেয়েও পারিনা ভুলে যেতে তোমার স্মৃতি বিজড়িত সেই দিনগুলো কোথায় আছো - কেমন আছো জানিনা কখনো জানা হয়ে ওঠেনি তোমাকে অথচ তোমার পেছনেই ছুটছি দূর হতে। এ যেন থামার নয় - এ যেন আমার নয় - আমার সমস্ত চিন্তা চেতনা ধ্যান-ধারনায় কেবল তোমার স্মৃতির আনাগোনা এভাবেই কি কাটবে জীবন আনমনা।

কি ভাবছেন ।। বিশ্বাস

ভাবছেন কি করে সম্ভব তাহলে কি হেরে গেছি লড়ায়ের লক্ষ্যের দিকে দিকে দেখুন বুঝতে চেষ্ট করুন - ভাবুন কেন এই লড়াই এ লড়াই স্বাধীনতার এ লড়াই মুক্ত মনে চলার ভাবছেন কেন এত জনপ্রিয় কেন এমন আনমনা - তাইনা! যদি তাই হয় তবে ভুল ভাবছেন ভাবছেন আমি কেন পারলাম না ভাবছেন হেরে যাওয়া যাবেনা তাহলে কি করতে হবে - ল্যাং মারি। অন্যকে ল্যাং মেরে আরেক জনের কাছে আপনিও যে ল্যাং মারা খাবেন না তার যোক্তিকতা কোথায় কোথায় আপনার নিরাপত্তা আপনিতো মুক্ত হতেই পারলেন না আজও আপনাকে আমাকে পরাধীনতার গ্লানি নিয়ে ঘুরে ফিরতে হয় নির্ঘুম কাটে সহস্র রজনী আমার ভাবি কি করতে পারি এই বন্দী দশার উপায় কি আদৌ মিলবে - কাটে শঙ্কায়।

পটভূমি ।। বিশ্বাস

অভ্যন্তরীন স্নায়ু যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে সন্ধ্যা তারা গুলো মিটি মিটি জ্বলছে আলো ছড়াবে বলে মশাদের গুনগুন শব্দে কান ঝালা ফালা কামড়ে বিষিয়ে তুলেছে পা দুটো আজও আমি মিথ্যার আশ্রয়ে তোমাদের কাছে বিভ্রান্ত।  প্রাচীন মিথগুলো জেঁকে বসেছে রূপকথার গল্প গুলো তোমাদের দৃশ্যপট গোঁড়ামিকে ঘিরেই বাঁচতে চাও বিনিময় প্রথার বেড়াজালে নাচো - এখানে যারা স্বাধীন ইচ্ছায় বাঁচে তারাও হয়ে উঠেছে তোমাদের নিকট বিভ্রাট।

সন্ধান ।। বিশ্বাস

অদ্ভুদ এক লোকারন্যে শব্দ নাচে কি বিষাক্ত সেই সুর সেই তাল আমি তালে তালে নেচে চলেছি এক বিম্বিত আলোর সন্ধানে সব অচল। আগে এত আকুল করা বিশ্রী শব্দ শুনিনি কান পেতে শুনেছি মৃত্যুর হাঁক শুনেছি ব্যাঙের ঘ্যাংর ঘ্যাংর ডাক তোমার কথা ভাবতেই কুহু কোকিল গায়। রাত পেরিয়ে কখন যে ভোর হয়েছে টের পাইনি কিছুই - ক্রমাগত ছুটছি ছুটে চলেছি আমি তোমার পিছু অন্ধকারে জোনাক জ্বলে - তলিয়ে গেছে কিছু। কিছু হারিয়ে গেছে সময়ের স্রোতে কালের বিবর্তনে নিজেকে বদলে ফেলতে হয় কিছু ইচ্ছা তবু অপূর্নই থেকে যায় গেয়ে যাই না পাওয়ার বেদনা - জীবন সংসারে।

সত্যবন্দী ।। বিশ্বাস

ভন্ডমীর খন্ড চিত্র তুলে ধরতে গিয়ে নোংরামীর দৃশ্যপট দেখতে গিয়ে আমি সেদিন কয়েদী বনে গিয়েছিলাম মশা মেরে মেরে কাটে রাত হতে ভোর নির্ঘুম। কোন কিছু করতে পারছিনা মন মত হৃৎপিন্ডটা থানায় জমা রেখে এসেছি গতকাল তখন থেকে আমি অন্ধ হয়ে যাচ্ছি - হারিয়ে যাচ্ছি ভিক্ষা ব্যবসার বেড়াজালে। কালে কালে বেড়ে গজিয়ে উঠেছে অনেক আগাছা কিছু আছে জীবনভর পরগাছা হয়েই বাঁচে কিছু আবার আলোহীন থাকে-বাঁচে-নাচে এরা কারনে অকারনে দাপট দেখাতে তৎপর হয়। নির্বোধের দল উদ্ভট দাবি নিয়ে হাজির আর আপনারা নীরবে সমর্থন দিয়ে চলেছেন ধ্বংশের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন কিনা বোধে কি আসেনা - আপনার আমার আমাদের সকলের।

প্রলাপ 2 । । বিশ্বাস

আমিতো আপনার কাছে অযোগ্য বাতুলতাপূর্ণ আমিতো ভ্রান্তই রয়ে গেলাম আজও গন্ডি বুঝেন আপনি - আমি বুঝিনা আপনি কেবল লাই দিতে জানেন। লাই দিয়ে দিয়ে মাথায় তুলেছেন - ঠেলা না পাইয়েই কি নামবে মাথা থেকে ঠেলা সামলান সময় থাকতে - নইলে ছোবল দিতে দেরি হয়না সাপের বিষধর বিষাক্ত হয়ে উঠছে ধীরে ধীরে। বিষে আমার মরন হয়না - হয় অপ্রশ্নে কয়েকখান প্রশ্ন নিয়েই আপনি মত্ত - আর আমার সীমাবদ্ধতা টেনে দিতে চান এটা করা যাবেনা - ওটা জানা যাবেনা। জানতে যদি আপনার আপত্তি থাকে থাকুন আপনি নির্বোধ - জানার পথে বাধা দেবার কে আপনি মশাই।

নেই সেই চত্তর ।। বিশ্বাস

সে দিনের সেই উদ্দাম বিচরণ নেই নেই সেই অজানা কারনের অপেক্ষা একা চত্তরে বসে থাকা নেই পুরনো দিনগুলো বদলে গেছে আমার আমি আর সেই আগের মত নেই । জানি বদলে যাই - বদলে জেতে হয় তবু ফেলে আসা তোমার ছায়া পিড়া দেই চাইলেও ভুলে যাওয়া যাই না সেই বিকেল সন্ধ্যার আলো-আঁধারে একা যাপন পথপানে নির্বাক তাকিয়ে থাকা কোন এক অজানা গন্তব্যের দিকে । কতগুলো বিকেল কেটে গেছে আমার এই চত্তরে কতগুলো যাতনা ঘিরে আছে অন্তরে উদাসীনতার সেই ঝলমলে অস্তগামী প্রহর নেই নেই সেই নিতান্ত বোকার মত বসে থাকা কোন এক সুন্দরের প্রতীক্ষা ।